ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কেউ ঠেকাতে পারবে না, আল্লাহ ছাড়া: সালাহউদ্দিন আহমদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এই নির্বাচন আল্লাহ ছাড়া কেউ ঠেকাতে পারবে না।
শনিবার নেত্রকোনা জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, “পিআর (প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন) পদ্ধতি নিয়ে যারা আজ বিভ্রান্তিকর কথা বলছে, তারা ভিন্ন উদ্দেশ্যে মাঠে নেমেছে। কেউ কেউ বলছে, যদি পিআর পদ্ধতির নির্বাচন না হয়, তাহলে বাংলাদেশে নির্বাচন হতে দেবে না। আমি আজ স্পষ্ট করে বলছি—রমজান শুরু হওয়ার সপ্তাহখানেক আগে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন হবে। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কেউ সেই নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন, “যারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, নানা অজুহাতে বিভ্রান্তি তৈরি করছে, তাদের উদ্দেশে বলছি—আমরা গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছি। ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াই আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে চালিয়েছি। সুতরাং আসুন, আমরা গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ রাখি।”
সালাহউদ্দিন আহমদ বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমরা প্রথম ও শেষ বাংলাদেশে বিশ্বাস করি। আমাদের কোনো প্রভু থাকবে না। বাংলাদেশই আমাদের রাজনীতির ঠিকানা।”
তিনি ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাকশাল গঠনের মাধ্যমে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমালোচনা করে বলেন, “স্বাধীনতা পেয়েও বাকশাল কায়েম করা হয়েছিল। পরে শহীদ জিয়াউর রহমান গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন, যদিও তাঁকে তা করতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয়।”
আওয়ামী লীগের সমালোচনায় সালাহউদ্দিন বলেন, “আওয়ামী লীগের ইতিহাস গণতন্ত্র হত্যার, সন্ত্রাসবাদের, ধর্ষণ আর গুলির। এখন পর্যন্ত তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চায়নি, অনুশোচনা প্রকাশ করেনি। বরং তারা গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের অপরাধী বানাতে চায়—এটা তাদের ধৃষ্টতা।”
সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা যারা সংস্কারের কথা বলি, তারা চাই সংবিধানের বাইরে যেসব সংস্কার আছে, তা এখনই অধ্যাদেশ বা নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। তবে সংবিধান সংশ্লিষ্ট সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার ও সংসদের প্রয়োজন।”
সম্মেলন সম্পর্কে:
মোক্তারপাড়া মাঠে অনুষ্ঠিত নেত্রকোনা জেলা বিএনপির এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আহ্বায়ক মো. আনোয়ারুল হক এবং সঞ্চালনা করেন সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম হিলালী।
বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নেতারা হাবিব উন নবী খান সোহেল, শরীফুল আলম, কায়সার কামাল প্রমুখ।
১১ বছর পর অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে ১,৫১৫ জন কাউন্সিলর ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।