যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কে ভারত-চীন বিপাকে, বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়তে পারে ২০০ কোটি ডলার
যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও চীনের ওপর উচ্চহার শুল্ক আরোপ করায় বিশ্ববাণিজ্যে একটি নতুন সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের জন্য। এ পরিস্থিতির সুফল নিতে পারলে বছরে প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার পর্যন্ত অতিরিক্ত রপ্তানি আয় করতে পারে বাংলাদেশ।
আজ শনিবার রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘সামষ্টিক অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের পথ’ শীর্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন স্মারক বক্তৃতায় এ তথ্য তুলে ধরেন বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন।
তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র ভারতের পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ, চীনের পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ এবং বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে। এর ফলে ভারত ও চীনের তুলনায় বাংলাদেশের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে তুলনামূলক কম খরচে প্রবেশ করতে পারবে, যা একটি প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা সৃষ্টি করেছে।
আগে ধারণা করা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের ২২ শতাংশ রপ্তানি হারিয়ে ভারতে চলে যেতে পারে। কিন্তু নতুন শুল্ক কাঠামোতে সেই চিত্র বদলেছে। ভারত সরকারের হিসাব অনুযায়ী, এ পরিস্থিতিতে ৪ হাজার ৮২০ কোটি ডলারের রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দেশটির।
বক্তৃতায় দেশের অর্থনীতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরে জাহিদ হোসেন বলেন, বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরেছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “অস্থিতিশীলতা তৈরির পেছনে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা এখন ক্ষমতার বাইরে। অর্থ পাচার কমেছে, ব্যাংক খাতে দুর্বৃত্তায়নও কমেছে।”
তিনি বলেন, এটি নীতির পরিবর্তনের কারণে নয়, বরং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার বাস্তবিক রূপান্তরের ফল। তবে এর মানে এই নয় যে সরকার সব সিদ্ধান্ত সঠিকভাবে নিচ্ছে।
হুন্ডির মাধ্যমে অর্থপ্রেরণ হ্রাস এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তবে ব্যাংক খাতের কাঠামোগত দুর্বলতা, খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি, এবং জ্বালানি সংকটসহ বিভিন্ন বাধার কারণে অর্থনীতি মধ্যম আয়ের ফাঁদে আটকে পড়েছে বলেও মত দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন:
- আইসিসিবি সভাপতি মাহবুবুর রহমান
- ইআরএফ সভাপতি দৌলত আখতার (সভাপতিত্ব)
- ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম (সঞ্চালনা)